এসএসসির রেজাল্ট

এসএসসির রেজাল্ট দিয়েছে। সোস্যালের গোয়ালে যথারীতি বেশিরভাগই হাস্যরস আর আনন্দের প্রকাশ দেখতে পাচ্ছি । ত্রয়োদশীয় বালিকা থেকে শুরু করে আমার বয়সী বুড়োরা- কেউই মোটামুটি ছাড় দিচ্ছে না। কিন্তু আনন্দ বাদ দিয়ে যদি আমার মতো বুড়োর কাছেও এরা কেউ পরামর্শ চাইতে আসে তখন অন্তরাত্মা শুকিয়ে যাবে। কারন কি পরামর্শ দেবো এই প্রজন্মকে।

আমি বিজ্ঞানের ছাত্র। মানে আগাগোড়া সাইন্স। ছোটবেলায় বিজ্ঞান বইতে পড়েছি পৃথিবী গোল। কিন্ত বলা হলো চিরন্তন সত্য হলো পৃথিবী সমতল। আবার একটু বড় হয়ে পড়লাম মানুষ অর্থাৎ হোমো সেপিয়েন্স প্রজাতি এসেছে আফ্রিকার নিয়ান্ডারথাল থেকে বিবর্তিত হয়ে। তখন সেটা মানতে পারিনি। তাই এখনও মানতে কষ্ট হয় যে মোবাইল,কম্পিউটার, ইন্টারনেট এগুলো বিজ্ঞান দিয়েছে। আবার চিকিৎসা,শিক্ষা,যোগাযোগ সবক্ষেত্রেই বিজ্ঞান অনেককিছু দিয়েছে; জানি। কিন্তু বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রা মানি না। তাইতো বলি এই ছাইন্স না বুঝাইলেও পারতেন মিয়ারা। সাইন্স নিতে বললে ওদেরকেও এই ছাইন্সই বুঝানো হবে নিশ্চিত।
মানবিক আর ব্যবসায় শিক্ষার ক্ষেত্রেও মোটামুটি সেইম। আটবছর ডেবিট-ক্রেটিডের হিসেব মেলানোর পর তাকে বলা হবে জীবনের হিসেব ডাটায় মিলবে না, সে হিসাব আগেই ঠিক করে দেয়া হয়েছে।
আর সমাজবিজ্ঞানে পড়ার পর তাকে বলা হবে সমাজ নিয়া ভাইবা কি হইবে, সমাজের গতিপথ অতীতেই ঠিক করে দেয়া হয়েছে।
আসলে শিক্ষাব্যবস্থার সমস্যার কথা সবাই জানে। যারা উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত তারাও জানে, যারা কোনো শিক্ষায় শিক্ষিত না তারাও জানে। সমস্যাটা হইলো কেউই মনে হয় জানে না সমস্যাটা মূলত কি । আবার অনেকে জানলেও মানে না, অনেকে মানলেও স্বার্থের কারনে বাস্তবায়ন করে না।
আমি নিজেও আসলে জানি না আগামী প্রজন্মকে আমাদের মত অন্ধদের এই রেসের খেলা থেকে বের করার আদৌও কোনো পথ আছে কিনা। শুধু স্বপ্ন দেখি। এর বাইরে আর কিছুই দেখি না। কেননা শিক্ষা,সমাজ, দেশ, রাজনীতি,জীবনব্যবস্থা সবকিছুই একসূত্রে গাঁথা। আর সবকিছুই বাঁধা পরে আছে ভয়,লোভ আর অজ্ঞতার কাছে।

Comments

Popular posts from this blog

বাতাসে বারুদের গন্ধ

স্কুল ড্রেস