Posts

Showing posts from March, 2019

প্রথমের পরেও একটা শুরু থাকে

Image
আমার মধ্যে কর্মস্পৃহাটা আমি কখনই খুঁজে পাই নি। আপনার দেখা সবচেয়ে কর্মবিমুখ মানুষটার জায়গায় আমাকে বসিয়ে দিন। পারফেক্ট । অনেকদিন ধরেই ভাবছিলাম লেখাটা শুরু করব। ভাবা পর্যন্তই । কলম আর হাতে নেয়া হয় না । স্যারের বাসায় নিয়মিত পড়তে যাওয়াটা আমার স্কুল জীবনের সাথে সাথে সমাপ্ত হয়ে যায়। কারন তখন মায়ের কাছে ছিলাম । মা জোর করে,বুঝিয়ে, লোভ দেখিয়ে আরও কত কি করে যে পড়াতে পাঠাতেন এখন সব মনেও পড়ে না। স্কুল জীবনের পরিসমাপ্তি। মায়ের কোল ছেড়ে শহুরে মেস জীবনের শুরু।  আর নিয়মিত প্রাইভেট পড়তে যাওয়ার সমাপ্তি। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষারও ছন্দপতন শুরু । কখন-কিভাবে যে ছন্দপতনটা হল তা নির্দিষ্ট করে বলা সম্ভব না । তবে সকালবেলা কলেজের থেকে যখন ঘুমটা প্রিয় হয়ে উঠল তখন থেকেই হয়তো শুরু । এরপর একদিন সদর রোডে ঘুরতে ঘুরতে আঙ্কেল আর তার দোকানের সাথে পরিচয় । একটা প্রবাদ আছে , “হাঁসের কুড়ার নাগাল পাওয়া” । আমিও যেন কুঁড়ার নাগাল পেলাম । মফস্বল শহরে যেখানে একটা ‘ওয়েস্টার্ন ‘ পাওয়া ছিল প্রবল সাধনার বিষয় , সেখানে ওয়েস্টার্নের সমগ্র জগৎটাই আঙ্কেল সাজিয়ে রেখেছেন। মাসুদ রানা, অনুবাদ, তিন গোয়েন্দা । কি নেই তার কাছে। প্রতিটা বইয়ের ভাড়া

স্কুল ড্রেস

স্কুল   ড্রেস এই রিক্সা যাবা । রহমত মিয়া নিরাসক্ত দৃষ্টিতে লোকটার দিকে তাকিয়ে বলল, কই যাইবেন? চৌরাস্তা। না ওদিকে যামু না। রহমত মিয়া ধীরে ধীরে রিক্সার প্যাডল দিতে থাকে।আজকে তার রোজগার ভাল। এখন হোটেলে গিয়ে চারটা ডাল-ভাত খেতে হবে।আজকে মুরগি দিয়া খাওয়া যায়। চিন্তাটা মাথায় আসলেও সাথে সাথে গাঁয়ে থাকা ছোট্ট মেয়েটার কথা ভেবে  সে কিছুটা  আনমনে হয়ে রিক্সা চালাতে থাকে।মেয়েটা এ বছর স্কুলে ভর্তি হয়েছে। একটা নতুন স্কুল ড্রেসের জন্য আজকেও মোবাইলে কান্না-কাটি করছে। এখন আয়রোজগার যখন একটু ভাল হচ্ছে তা দিয়া বাজে খরচ না করে কিছু টাকা জমিয়ে মেয়েটাকে একটা ড্রেস কিনে দিলে খুশি হবে।ছেলেটাকে তো কিছুই দিতে পারে নাই।আর দিবেই বা কোথা দিয়ে।গাঁয়ে বদলা দিয়ে যা আয় হত তা দিয়া তিনবেলা খাওয়াই  জুটত না।বউটা ঠিকা কাজ করে সংসারটা কোনরকম দুইজনে চালিয়েছে।মেয়েটা হওয়ার পর ছোটশালার কথামত শহরে এসে রিক্সা চালিয়ে বাড়ি টিনের ঘর উঠছে,পোলারে মেট্রিক পাস দেওয়াইছে।হানিফ মাস্টার  বলছে পোলায় নাকি খুবই ভাল পাস দিছে। রহমতকে দেখে কালু মিয়া বলে উঠল, কি মিয়া আইজ তাড়াতাড়ি আইলা যে। খ্যাপ নাই, মানু এহন ব্যাটারির গাড়ি খোজে, আমা

অনাঘ্রা্তা

প্রত্যেকরাতে কোথা থেকে যেন প্রেশারকুকারে রান্নার শব্দ আসে। তনু পড়ার টেবিল ছেড়ে বারান্দায় এসে শোনার চেষ্টা করছে কোন বাসা থেকে প্রতিদিন এই শব্দটা আসছে। সে কয়েকদিন ধরেই এই রহস্যটা সমাধান করার চেষ্টা করছে। প্রতিরাতে কেউ তিন-চারবার প্রেসারকুকারে রান্না করবে সেটা ভাবতেই অবাক লাগে।শব্দটা কোথা থেকে আসছে,দোতলার ব্যালকনি থেকে বোঝা যাচ্ছে না । সামনে এইচ.এস.সি পরীক্ষা।এখন উচিত সময় নষ্ট না করে পড়ার টেবিলে বসা।যদিও সব পড়া।তবু পরীক্ষার আগে পড়ার টেবিল রেখে এইরকম ফালতু বিষয় নিয়ে মাথা ঘামাতে নিজের উপরই বিরক্ত লাগছে। মা এসে বারান্দায় দেখলেই চোখমুখ অন্ধকার করে বলবে, দু’দিন পর তোর পরীক্ষা, আর তুই এখন বারান্দায় বসে বাতাস খাচ্ছিস। জীবনে যদি তোর  কান্ডজ্ঞান  হত। যদিও তনুর মনে হয় ওর  কান্ডজ্ঞান  খুব ভালই আছে । সে বোর্ড স্ট্যান্ড করা ছাত্রী । এস.এস.সি তে সারা বাংলাদেশে ফিফথ হয়েছে। তার চোখের চশমার পাওয়ার দিন দিন বাড়াতে হচ্ছে। পড়ার টেবিলে বসার সাথে সাথে ও বাবার গলার আওয়াজ পেল। তনু মা, কি করছ? বলতে বলতে আহাদুল করিম রুমে ঢুকলেন । মুচকি হেসে তনু মুখ তুলে চাইলেন। আহাদুল করিম একটা ধাক্কার মত খেলেন। তনু যতবার মুচ

বিষণ্ণতা

Image
বাসায় অথিতির আগমন। কিন্তু ছোট্ট সেই শিশুটির মন ভাল নেই। কারন কালকের হোমওয়ার্ক শেষ করতে হবে।তাই বিষণ্ণ মনে সে তার ভাল না লাগা কাজটি করে যায়। সেই থেকে শুরু।   তারপর থেকে জীবনের প্রত্তেকটা পদে তাকে বিষণ্ণতা নামক রোগটির সাথে লড়াই করে যেতে হয়। প্রত্যেকটা রোগের চিকিৎসা আছে,কিন্তু  বিষণ্ণতা নামক ব্যধির কোন চিকিৎসা নেই । কারন আমরা বুঝতে ই পারি না আমাদের মনে এত বড় একটা রোগ কখন বাসা বেধেছে। রোগ হয়েছে তাই যদি বুঝতে না পারি তো ওষুধ খাব কি! যদিও বা কেউ বুঝতে পারে সেটাকে মনের দুর্বলতা বলে ভেবে নেয়।   এ এমন এক দুর্বলতা যাকে প্রশ্রয় দেয়া যায় না,তাহলে সর্বনাশ! বাস্তব জীবনে এসকল দুর্বলতাকে প্রশ্রয় দিতে নেই । বিরক্তিতে, রাগে,ক্ষোভে,দুঃখে, অমনোযোগিতায়  প্রতিটা আচরণে সে কিন্তু তার উপস্থিতি জানান দিয়ে যায়। শরীর সুস্থ রাখতে আমরা কত কিছুই না করি,কিন্তু যে ঘাতক ব্যধি আমাদের ধীরে ধীরে দুর্বল থেকে দুর্বলতর করে ফেলছে তার খোঁজ রাখার সময় কোথায়। যান্ত্রিক এ যুগে সবার সাথে তাল মিলিয়ে চলতে হলে এসব ছোটোখাটো বিষয় নিয়ে না ভাবাই উত্তম। কিন্তু সময়ে-অসময়ে “ভাল্লাগে না” নামক জিনিসটা যখন কর্মস্পৃহা থামিয়ে দেয়,তখন বলি ঘট