করোনা নিয়ে শিশুদের সাথে আলোচনা

করোনা নামক মহামারীতে আজ পুরো পৃথিবী স্তব্ধ। বন্দীজীবনে আমরা সবাই কিছু না কিছু মানসিক জটিলতায় ভুগছি। তবে সবথেকে বেশি সমস্যায় রয়েছে শিশুরা। তারা উচ্ছ্বল, খোলামেলা জীবনকে ছুটি দিয়ে ঘরবন্দী জীবন কাটাতে বাধ্য হচ্ছে । এই সময়টাতে বৈশ্বিক এই মহামারী নিয়ে আপনার সন্তানের সাথে খোলা মনে আলোচনা করুন।


প্রথমত, আপনার সন্তানের সাথে মহামারী নিয়ে আলোচনা শুরু করুন। জানার চেষ্টা করুন সে কতটা জানতে পেরেছে। এই বিষয়ে তারা কি কি সতর্কতা অবলম্বন করছে সেটাও জানার চেষ্টা করুন। আপনাকে এটা নিশ্চিত করতে হবে যেন তারা সহজে এ বিষয়ে আপনাকে প্রশ্ন করতে পারে। সর্বপরি এই মহামারির সময় আপনার সন্তানের সাথে বন্ধুর মত সম্পর্ক গড়ে তুলুন। একসাথে ছবি আকা,গল্পের বই পড়া অথবা খেলার মাধ্যমে তার সাথে খোলামনে কথা বলা শুরু করতে পারেন।
খুব ছোট হলে এ বিষয়ে আলোচনা না করাটাই উত্তম। তাদেরকে পরিষ্কার -পরিচ্ছন্নতার সাধারন বিধি-নিষেধগুলো মেনে চলতে উৎসাহিত করুন।

পরবর্তী গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হল তাদের প্রশ্নের সঠিক উত্তর দেয়া। বিশ্বের সকলের ন্যায় শিশুদেরও অধিকার রয়েছে মহামারী সম্পর্কে সঠিক তথ্য পাবার। আপনি কোন প্রশ্নের উত্তর না জানলে এড়িয়ে যাবেন না। এটাকে সকল প্রশ্নের উত্তর একসাথে দেবার সুযোগ হিসেবে গ্রহন করুন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও ইউনিসেফের ওয়েবসাইটে কোভিড-১৯ সম্পর্কে তথ্যের খুব ভাল সোর্স হতে পারে। আপনার সন্তানকে সঠিক তথ্য জানতে উৎসাহিত করুন।
পাশাপাশি আপনার সন্তান কিভাবে নিজেকে ও তার বন্ধুদের নিরাপদ রাখতে পারে সে সম্পর্কে তাদের তথ্য দিন। নিয়মিত সঠিকভাবে কিভাবে হাত ধুতে হবে,হাঁচি-কাশি দেবার সময় কিভাবে টিস্যু অথবা কনুই ব্যবহার করবে, কিভাবে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখবে এই সম্পর্কে শিক্ষা দিন।
চেষ্টা করুন যেন ওরা মানসিকভাবে চাঙা থাকে। টিভি ও বিভিন্ন অনলাইন মিডিয়ার নানা নেতিবাচক খবর আপনার সন্তানকে মানসিকভাবে পর্যদুস্ত করে ফেলতে পারে। তাই ওদের মানসিকভাবে চাঙা রাখতে উদ্যোগ নিন। খেলার সুযোগ করে দিন অথবা পারিবারিক গল্পের আসর বসান অথবা যা ওদের মনকে প্রফুল্ল রাখে সেই ব্যবস্থা করুন।
খেয়াল করুন আপনার সন্তান স্টিগমার স্বীকার হচ্ছে কিনা অথবা ছড়াচ্ছে কিনা। পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে এই মহামারীর জন্য বিভিন্ন বর্ন,ধর্ম ও জাতিগোষ্ঠীর মানুষকে দায়ী করা হচ্ছে।খেয়াল করুন আপনার সন্তানও এমন কিছুর স্বীকার হচ্ছে কিনা। তাকে বুঝিয়ে বলুন কোন নির্দিষ্ট মানুষ করোনাভাইসের জন্য দায়ী নন।
এই মহামারীতে যারা সামনে থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছে যেমন স্বাস্থ্যকর্মী,পুলিশ,মিডিয়ার লোকজন এদের সম্পর্কে আপনার সন্তানের সাথে কথা বলুন। তাদেরকে বুঝিয়ে বলুন এরাই সংকটকালীন সময়ে প্রকৃত যোদ্ধা। তাদের প্রতি আমরা সবাই কৃতজ্ঞ।
পরিশেষে ইতিবাচকভাবে আলোচনার সমাপ্তি টানুন। এটা নিশ্চিত করুন যে আপনার সন্তান যেকোনো বিষয়ে আপনাকে প্রশ্ন করতে পারে। ওর মনে কোনো বিষয় নিয়ে উদ্বেগ সৃষ্টি হলে সে যেন নিঃসংকোচে আপনার সাথে শেয়ার করতে পারে।

তথ্যসূত্রঃ ইউনিসেফ


Comments

Post a Comment

Popular posts from this blog